লৌহ প্রেম

বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী (নভেম্বর ২০১২)

তাপসকিরণ রায়
  • ৫২
  • ১৯
রাতের অন্ধকারে তিন তিনটে নিগ্রো লোক নুরুলার হোটেলের কামরায় ঢুকে পড়লো।ও তখন একলা।রাতে ব্যালকনি থেকে বাইরের শোভা দেখে,কিছু সময় পায়চারি করে,সবে মাত্র ঘরে ঢুকে ছিল।ঠিক এমনি সময় চ্যাঁ চ্যাঁ করাতের ধারে লোহা কাটার মত শব্দ হল।পরক্ষণেই ও দেখল ঘরের দরজা খুলে তিনটে কালো চেহারার ষণ্ডাগুণ্ডা মত লোক ঘরে ঢুকে পড়ল।
ওরা সোজা ওর কাছে এসে ওকে ঘিরে ধরল।একের পর এক ওরা তিনজনেই বলে উঠলো,উই ওয়ান্ট টু লাভ ইউ!কথাগুলি বেশ সুন্দর সুরেলা লাগছিল। ওদের কথাগুলি যেন আলাদা আলাদা বিলম্বিত লয়ে বেজে উঠলো!
--হু আর ইউ?নুরুলার কম্পিত কণ্ঠ থেকে ভীত ত্রস্ত কথাগুলি বেরিয়ে এলো।
তিন মূর্তি একে একে বলে গেল,আই আম--এলিস,ইওর লাভার,আই আম, জেমস,আই এম এলিট,মেম!
ভীত,অদ্ভুত স্বপ্ন দেখার মত লাগছিল নুরুলার।এ সব কি হচ্ছে ওর চোখের সামনে--কারা এরা? ডাকাত,কিডন্যাপর,না বলাৎকারী!ও জোরে শ্বাস টেনে নিয়ে কিছু সাহস সঞ্চয় করার চেষ্টা করে বলে উঠলো,হোয়াট কেন আই ডু ফর ইউ?
সামান্য সময় নিয়ে কদাকার মূর্তিগুলি একের পর এক বলে উঠলো,চলো আমাদের সঙ্গে,আমাদের
ভালোবাসতে হবে,ওদের একজন কাছে এসে নুরুলার হাত চেপে ধরল।
--আঃ,করে চীত্কার করে উঠলো নুরুলা।
--ভয় পেয়ো না,চুপ করে আমাদের সঙ্গে চল। চীত্কার করলে গলা টিপে দেব।বলা বাহুল্য কথা বার্তা সবই চলছিল ইংরেজিতে।
ভয়ে চীত্কার করতে পারল না নুরুলা,দেখল ওদের লোহার মত শক্ত হাত বটে!সত্যি,ইচ্ছে করলে এক হাতেই গলা টিপে ওকে মেরে ফেলতে পারে!
--কোথায় যাবো?ভীত নুরুলা বলে ওঠে।
আবছা আলো অন্ধকার পার করে ওই তিন যমদূতের মত লোকের সঙ্গে রাস্তায় নেমে এলো নুরুলা।
একি!এবার একজন তাকে পাঁজাকোলা করে নিলো আর সবাই মিলে নির্জন রাস্তা ধরে হাঁটতে লাগলো।মাঝে একবার দু বার চীত্কার করার চেষ্টা করেছিল নুরুলা,কিন্তু পাশের লোকটা তার মুখ চেপে ধরে থাকলো,গুঁ,গুঁ ছাড়া আর কিছুই ওর মুখ থেকে বের হল না।এ রাস্তা,সে রাস্তা করে এক বড় বাড়ির দরজার সামনে এসে ওরা দাঁড়ালো।বাড়ির গেটে বিরাট তালা ঝুলছিল।নুরুলা আধ বোজা চোখে দেখতে পেল,গুণ্ডাদের এক জন তার কেনে আঙুল তালার ছিদ্রে ঢুকিয়ে চাবির মত করে মোচড় দিয়ে তালা খুলে দিল।
বাড়ির ভেতর ঢুকে গেল সবাই।একটা বড় ঘরে আবছা লাইট জ্বলছিল।তাতে বিরাট লোহার খাট বিছানো।নুরুলাকে নিয়ে খাটে শুয়িয়ে দিল।
ও ঝট করে সরে গিয়ে খাটের এক কোণে ভয়ে জড়সড় হয়ে বসলো--বিষণ্ণ কান্নার আওয়াজ ওর মুখ থেকে বেরিয়ে আসছিল।লোকগুলোর বদ উদ্দেশ্য জানতে ওর বাকি থাকলো না।ও এখন নিরুপায়।এদের হাত থেকে আর কোন মতেই ওর নিস্তার নেই।ওর গলা থেকে চীৎকার বেরিয়ে এলো,আমায় তোমরা ছেড়ে দাও!আমি বাংলা দেশ থেকে এসেছি, তোমাদের মেহমানের এমনি সর্বনাশ করো না,প্লিজ!নুরুলা ওদের পায়ে লুটিয়ে পড়ল।তবু কালো লোকগুলো, নুরুলাকে ঘিরে ফেলল।এক জনের পর এক জন এসে নুরুলাকে বিছানার ওপর ফেলে জাপটে ধরল,জোর করে ওরা আপন প্রেমিকার মত ওকে চুম্বন দিতে থাকলো,বলতে লাগলো,আই লাভ ইউ,আই লাভ ইউ।কিছু সময় ওরা ওকে সজোরে জাপটে ধরে থাকলো।
ভীষণ ভয় পেয়েছে নুরুলা।বলাৎকারের সমস্ত দৃশ্য তার চোখ বোজা অনুভবে একের পর এক উজাগর হয়ে যাচ্ছিল।এমন কি বলাত্কারীরা ওর কাপড় শরীর থেকে সরিয়ে দিয়ে ছিল।ও মনে মনে নিজের মৃত্যু কামনা করছিল। পশুগুলির কাম ক্ষুধা নিশ্চয় ওকে মেরে ফেলবে।জ্ঞান হারাল সে।এ ভাবেই কি ধর্ষিতা হল নুরুলা।
ও যখন চোখ মেলে তাকাল,তখন নিজেকে হোটেলের বিছানায় দেখল। দেখল,সেই কালো ভূত মার্কা লোকগুলি তার দিকে তাকিয়ে বলছে,টেক রেস্ট ডার্লিং!গুড নাইট!
মনে মনে সে গভীর ভাবে ভাবতে লাগলো,সে ধর্ষিতা হল--সে চীৎকার করে দস্যুদের বলে উঠলো--কেন,কেন আমার জীবন তোমরা নষ্ট করে দিলে?
থমকে দাঁড়িয়ে গেল ধর্ষণকারীরা,ওদের মধ্যে এক জন বলে উঠলো,আমরা আসলে তোমাদের ভাষায়--রোবট।এখানকার বিজ্ঞানীরা আমাদের তৈরি করেছে।কোম্পানির গোডাউনে কিছু দিন আমরা নিষ্ক্রিয় পড়ে ছিলাম।একদিন কোম্পানির ম্যানেজারের ঘরে কাজের দায়িত্ব পেয়েছি।আর সেখানেই আমরা মালিক,মালকিনের প্রেম দেখেছি।ওদের মিলন দেখেছি।খুব আনন্দ পেতে দেখেছি।তোমরা প্রেমিক প্রেমিকারা খুব মেলামেশা করে আনন্দ পাও!
আমাদের তিনজনের মালিক একজন।
মালিক এক সপ্তাহের জন্যে সপরিবারে বিদেশে গেছে।আমরা সারা দিন রান্না বাড়া,খাওয়া দাওয়া করি আর মালিকের ঘর পাহারা দিই।হঠাৎ আমাদের মনে হল আমরাও তো তোমাদের মত মেয়েদের ভালোবাসতে পারি--উপভোগ করতে পারি!তোমায় আমরা তাই ধরে নিয়ে গিয়ে ছিলাম।আর তোমার সঙ্গে আমাদের দেখা হবে না।কালই আমাদের মালিক ফিরে আসছে।
ওরা আর অপেক্ষা না করে বেরিয়ে গেল।
হঠাৎ শরীরে একটা ঝাঁকুনি খেল নুরুলা,তা হলে,সে কি সত্যিকারের ধর্ষিতা হয় নি?সে সব কিছু অনুভব করতে চেষ্টা করতে লাগলো।শরীরে সমস্ত চিহ্ন খুঁজে দেখতে লাগলো।না,কোন লক্ষণই নেই।দেহের কোন কোন জাগা কেটে ছড়ে গেছে বটে কিন্তু ধর্ষিতা সে হয় নি!ভীষণ আশ্চর্য হল ও--রোবট এত কিছু করতে পারে? এত উন্নত ধরনের রবোটের সৃষ্টি হয়ে গেছে! না, আর ভাবার শক্তি নুরুলার মধ্যে ছিল না।এক সময় নুরুলা ঘুমিয়ে পড়ল।
(২)
সকালের ঝলমলে রোদ এসে নুরুলার ঘুম ভাগিয়ে দিল।এখানে ঘরের ভিতরে রোদ ঢুকে যাওয়া বিচিত্র ব্যাপার বটে।বিশেষ করে ও যে জাগায় আছে।চারি দিকে মাথা উঁচু করা বিল্ডিং গুলি দিনের আলো অনেকাংশে হরণ করে নিয়েছে।জাপানের টোকিও শহরের এক হোটেল,আকিগ্র্যান্ডে দুদিন ধরে ও থাকছে।ও ঢাকা ইউনিভারসিটি থেকে সফট ওয়ারের ওপর ডক্টরেট করছে।এ সাবজেক্টের ওপর জাপান অনেক এগিয়ে আছে।তাই নুরুলার ইচ্ছে এডভান্স টেকনোলজির ওপরে বিশেষ কিছু এখান থেকে জেনে নিতে পারবে।এখানকার বিখ্যাত এক কলেজের কর্তৃপক্ষ ওকে সুযোগ দিয়েছে,ও নিজের সাবজেক্টে সাত দিন ক্লাস এটেন্ড করতে পারবে।
ভেবে ছিল,এ হোটেল ছেড়ে পালিয়ে যাবে।কিন্তু পরে ভেবে দেখল,না,রোবট দস্যুরা আর আসতে পারবে না,বলে গেছে।কালকের ভয়ঙ্কর রাতের কথা ওর বারবার মনে পড়ছিল।
রাতে স্টাডি সেরে নুরুলা ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ায়।রাত অনেক হয়ে গেছে,ভয় লাগছিল ওর।আকাশের দিকে তাকাল,না,চাঁদ নেই—এখান থেকে চাঁদ,তারা দেখতে পাওয়ার জো নেই।ঠাণ্ডা হওয়ায় শরীর জুড়িয়ে যাচ্ছিল।এ.সির হওয়া থেকে এ যেন অনেক ভালো, প্রকৃতির ছোঁয়া আছে।হঠাৎ খুট,করে একটা শব্দ ওর কানে এলো,দেখল,সামনের বড় রাস্তার ঠিক ওপারে একটা ঘরের জানালা খোলার শব্দ।সামান্য পরেই এক দীর্ঘকায় পুরুষ সে ঘর থেকে ব্যালকনিতে বেরিয়ে এলো। নুরুলা রুমের ভিতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করতে গিয়ে হঠাৎ চোখে পড়ল,সেই ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটা তার দিকেই তাকিয়ে আছে!তার মানে লোকটা চুপি চুপি দেখার দৃষ্টি চোর!
হালকা হালকা মাথা ধরেছিল নুরুলার।অনেক দিন পর আবার মাইগ্রেনের ব্যথা চাগাড় দিল না তো!সেই সমর বিদেশ চলে যাবার পর রোজ সন্ধ্যে থেকে ওর মাথা ধরত।ও জানত তার কারণ,অতিরিক্ত চিন্তা,মানসিক বিষণ্ণতা, অবসাদ,সর্বোপরি ওর ব্যর্থ প্রেমী এ জন্যে দায়ী।
সমর ঢাকা ইউনিভার্সিটির ছাত্র।ম্যাকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিঙের ছাত্র। নুরুলার ব্রাঞ্চও ছিল তাই।তবে সমর ছিল এক বছরের সিনিয়র। ব্রিলিয়েন্ট স্টুডেন্ট।ইউনিভার্সিটির স্টাডির সঙ্গে ওর নিজস্ব মেধা কাজে লাগাচ্ছে।বিভিন্ন পরীক্ষা, নিরীক্ষা,গবেষণায়ও নাকি সব সময় ব্যস্ত থাকে।
দেখতে খুব সুন্দর--কেমন আলাদা,মার্জিত এক চেহারা।সৌম্য দর্শন।প্রথম দেখাতেই নুরুলার খুব ভালো লেগেছিল।ইচ্ছে হচ্ছিল দু চারটে কথা বলার,এক ফাংশনে ওর সাথী নুর তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে ছিল। সমর ওর দিকে না তাকিয়ে সেলাম,আদবের ভঙ্গিতে হাত তুলে ছিল।নুরুলার সে দিন মনে হয়ে ছিল ছেলেটি খুব অহংকারী,উচ্চাকাঙ্ক্ষী হবে।তবু নুরুলা প্রতি আদাব জানিয়ে বলে ছিল,আপনার নাম অনেক শুনেছি,আজ পরিচয় হল।
হাসে নি,কেবল হাসির রেখা ফুটে উঠেছিল সমরের মুখমণ্ডলে।কিন্তু তা মুহূর্তের জন্যেই, নুরুলার কথার জবাব সে দেয় নি।
আবার নুরুলা মুখ খুলে ছিল,আপনি নাকি যন্ত্র মানব নিয়ে গবেষণা করছেন?
এবার হাসল সমর,তাকাল নুরুলার দিকে,মুখ থেকে সংক্ষিপ্ত জবাব বের হল,আপনি জানেন?
--শুনেছি।
--আপনার ইন্টারেস্ট আছে এ সবে?
--হ্যাঁ,কিছুটা সাবজেক্ট রিলেটেড বলে—
এবার স্পষ্ট দৃষ্টিপাত করল নুরুলার দিকে সমর,আপনি কি আমার সঙ্গে এ বছর ফাইনাল দিচ্ছেন?
--না,না,আমি আপনার থেকে এক বছর জুনিয়ার,তারপর কিছু না ভেবেই নুরুলা বলে বসলো,আপনার গবেষণার ব্যাপারে খুব জানতে ইচ্ছে করে।
--আসুন না এক দিন,সমর বলল।
আর বিনা দ্বিধায় নুরুলাও বলে উঠলো,আপনার মোবাইল নাম্বার কি আমি পেতে পারি?
ব্যাস,আলাপের সূত্রপাত সে দিন থেকে।চেনা চেনা মুখ নিয়ে একটা বছর কেটে গেল।ইতিমধ্যে সমর ওর ব্রাঞ্চের ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে বের হল,ওর যন্ত্র মানবের গবেষণাও সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে গেল।
নুরুলা এক বছরে বেশ কয়েকবার ওদের বাড়ি গেছে।সমর বলতে গেলে সব সময় ব্যস্ত থাকে। শুরুতে ওর মা নুরুলাকে বৈঠকখানায় বসিয়ে চাকর দিয়ে খবর পাঠাতেন সমরের কাছে। এমনি আধঘণ্টা কেটে গিয়ে ছিল।নুরুলা সমরের মার সাথে গল্প করছিল।চায়ের পর্ব হয়ে যাবার পর আর বসে থাকা যায় না ভেবে যখন ও ফিরে যাবার জন্যে উঠে দাঁড়ালো,ঠিক এমনি সময় সমর এসে বলল,সরি,নুরুলা,এই এম এক্সট্রিমলী সরি!অনেক দেরী করে ফেললাম। আপনি বসুন।
--না,না,ঠিক আছে,সঙ্কোচ নিয়ে বসে পড়েছিল নুরুলা।
--চলুন আপনাকে একটা জিনিস দেখাবো, সমর সে দিন নুরুলাকে তার গবেষণা কক্ষে নিয়ে গিয়ে ছিল।
গবেষণা কক্ষে হাজার যন্ত্রপাতি এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ছিল।সমর আগ্রহ ভরে বলে উঠলো,দেখুন তো এটা কি?
নুরুলা দেখল লোহার তৈরি বড় একটা ডল পুতুল মত দাঁড় করানো।ও কিছু বুঝতে পারল না,চুপ করে থাকলো।
--দেখুন এটা রোবট--আমি তৈরি করেছি।ও কিন্তু দু একটা কথা বুঝতে পারে,এক আধটার জবাব দিতে পারে,দরকারে কিছু কাজে ও আমায় সাহায্যও করতে পারে।
অবাক হয়ে যায় নুরুলা।ও রোবটের দিকে এবার সোজা দৃষ্টি নিয়ে তাকায়।লোহা রঙ্গের প্রায় আড়াই ফুটের মত লম্বা মানুষের আকৃতির মত অনেকটা--হাত,পা,চোখ আছে,মনে হল অনেক যন্ত্রপাতি ওর দেহে ভরা।ঠিক এমনি সময় সমর রিমোটের মত কিছু একটা টিপে দিল,সঙ্গে সঙ্গে মনে হল যেন যন্ত্র মানবের শরীরে যান এসে গেল!চোখে হালকা ধরনের লাইট জ্বলে উঠলো। সমর নির্দেশ দিল,প্লীজ,কাম হেয়ার,আব্দুল!
আর চমৎকার!ওটা দু পা থপ থপ করে সামনে এসে হাজির হল।
--হোয়াটস ইওর নেম? প্রশ্ন করল সমর।
ঠিক তত স্পষ্ট না হলেও,দূর থেকে ভাসা ভাসা রেকর্ড করা শব্দের মত রোবটের গলা থেকে বেরিয়ে এলো,আই এম আব--দুল।
নুরুলা ভীষণ আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল।এ তো বিরাট আবিষ্কার বলতে হবে।সমরকে সে কি ভাষায় প্রশংসা করবে ভেবে উঠতে পারল না।
--কি মনে হচ্ছে নুরুলা?সমর প্রশ্ন করেছিল।
--তুমি তো বিরাট আবিষ্কার করে ফেলেছ সমর দা!উভয়ে উভয়কে এভাবে কখন যেন তুমি বলে ফেলেছিল ওদের কেউ তা আলাদা ভাবে অনুভব করতে পারে নি।
সে দিন সমরের সাথে গবেষণা কক্ষে নুরুলা অনেক সময় কাটিয়ে ছিল। রোবটের আবিষ্কারের ব্যাপারে ও অনেক কথা বলে ছিল।নুরুলার ওসবের সামান্য কিছুই মনে আছে-ম্যাকানিকাল ডিভাইস,সেন্সর,মাইক্রো প্র্সেসার, মাইক্রো কনট্রলার,পি.এল.সি.,আরও অনেক কিছু নিয়ে সমর বলে চলেছিল।
সমর বলে ছিল পৃথিবীতে এমন এক দিন আসবে যে দিন রোবটরাও প্রেমের ভাষা বুঝবে--এমন কি প্রেমিক-প্রেমিকার আচরণের সাথে সাথে প্রেম করতে এগিয়ে আসবে।
নুরুলা প্রেমিকার মতই সমরের দিকে তাকিয়ে ছিল।কিছু কথা তার কানে যাচ্ছিল,কিছু নিজের প্রেম ভাবনায় মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছিল। ও স্তব্ধ হয়ে ছিল।এক সময় ওর আচমকা সম্বিত ফিরল।দেখল সমর ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। আসলে নুরুলা মনোজগতে বিচরণ করছিল--হয়তো সমরকে নিয়ে ও কোন উদ্যানে ঘুরে বেড়াচ্ছিল।সমর নিজের কথা বলতে বলতে যখন দেখল,নুরুলা অন্যমনস্ক হয়ে আছে,তখন ও দেখল নুরুলার সুন্দর দুটি চোখ।উদার উদাসী, ঈষৎ ভাবনার উৎফুল্লতায় রাঙা সে চোখ যেন সমর প্রথমবার দেখল!
--কিছু বলছিলে তুমি?নুরুলা হঠাৎ লজ্জায় নড়েচড়ে উঠলো।
--হ্যাঁ,তুমি তো আমার কথা শুনছিলে না--অন্য কিছু ভাবনায় তুমি--
--না,না,বল না,কি বলছিলে?
সমর নিজের আবিষ্কারে সন্তুষ্ট,সে তার আবিষ্কারের শেষ প্রান্তে পৌঁছেছে।ধীরে সে উঠে এসে নুরুলার পাশটিতে বসলো। বলল,রোবটের আর বেশী কাজ নেই--আমার এ কাজ এবার সারা দেশ জানতে পারবে।তারপর সারা বিশ্ব--তোমার কি মনে হয় নুরুলা?কখন যেন সমর নুরুলাকে বড় আপন করে জড়িয়ে ধরে প্রশ্ন করে ছিল।
--তুমি অসাধ্য সাধন করেছ,সমর!সেদিন নুরুলা সমরের বাহু বন্ধনে থেকেই অনায়াসে কথাগুলি বলতে পেরেছিল।দুজনেই আবেশিত হয়ে পড়েছিল। পরস্পর পরস্পরকে কখন যেন আরও নিবিড় করে কাছে টেনে নিয়েছিল।
তারপর থেকে সে প্রেম দুর্বার গতিতে এগিয়ে গেল।এ গতি অবশ্য নুরুলার দিক থেকেই ছিল,তা পরে একদিন ও বুঝতে পেরে ছিল। সমর তার গবেষণায় এগিয়ে যাচ্ছিল--তারই ফাঁকে,অবসর বিনোদনের মাঝে নুরুলাকে সে কাছে টেনে নিত--চুম্বনে চুম্বনে ভরিয়ে দিত। এমন সময়ও ছিল,উভয়ে ওরা এক সত্তায় মিশে যেত।এমনি এগিয়ে যাচ্ছিল দিন,মাস বছর...।
এক সময় নুরুলা খেয়াল করলো,সমর নিজের গণ্ডিতেই সীমা বদ্ধ।নেহাত নুরুলা নিজস্ব তাগিদে ওদের বাড়িতে যায়,ওর খোঁজ খবর করে তাই যেন সমর ওকে চেনে,জানে,ওকে নেহাত হাতের কাছে পায় তাই ওকে নিয়ে অবসর বিনোদন করে--আলাদা ভাবে ভালোলাগা, ভালোবাসার কোন লক্ষণই ওর মধ্যে ফুটে ওঠে নি।সমর কোন দিন নুরুলার বাড়ি আসে নি।তার সম্বন্ধে কৌতূহল প্রকাশ করেনি। নুরুলা যেচেই নিজের ঘরের কথা,নিজের পরিবারের কথা সব গড়গড় করে জানিয়েছে।সে জানে না,সে সব কথা আদৌ তার কানে প্রবেশ করে ছিল কি না!সমর একমাত্র জানে ওর গবেষণা,ওর আবিষ্কার ছাড়া যেন আর জগতে কিছুই নেই।হাতের কাছে অবসর সময়ে নুরুলাকে পেলে শুধু মাত্র রিলাক্স হবার জন্যেই বোধ হয় ও প্রেম প্রেম খেলা করে--ওর দেহ উপভোগ ক’রে আবার সঞ্জীবিত হয়ে ওঠে।সমরের ঘরে,কিম্বা বাইরে নুরুলার আলাদা কোন পরিচয় নেই--কেউ জানে না সমর নুরুলার প্রেমের কথা।
এক দিন সমরের ফোন এলো,বড় আশ্চর্য হয়েছিল নুরুলা।সমর ফোন করেছে!
--বলো ,কি এমন বিশেষ কারণে--নুরুলার কথা শেষ হয় নি তখনো।
অন্য দিক থেকে সমরের কথা ভেসে আসছিল--নুরুলা,আমি চলে যাচ্ছি--আমেরিকা,রোবট এন্ড রোবট সংস্থা থেকে আমায় আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
--আমায় কিছু বলবে কি তুমি?
--ওই,দু দিন পরে যাচ্ছি,তোমায় জাস্ট ইনফরমেশন দেবার ছিল,তাই--
--ব্যাস,নুরুলার খুব রাগ হল,কেমন ধরনের মানুষ!আমি যাচ্ছি,বলেই চলে যাবে?অন্যের প্রতি এতটুকু দায়িত্ব নেই তার!
তাড়াতাড়ি সমরের ঘরে গিয়ে ছিল নুরুলা।দেখল মাসিমা একা বসে কাঁদছেন! নুরুলাকে তিনি বলে ছিলেন,দেখো মা,সমরকে তুমি ফিরাতে পার কিনা,ও চলে গেলে আমি আর বাঁচব না।স্বামী তো অনেক দিন আগেই আমায় ছেড়ে চলে গেছেন।
নুরুলা সোজা সমরের গবেষণা ঘরে প্রবেশ করল।দেখল সমর দাঁড়িয়ে রোবটের দিকে তাকিয়ে আছে।রোবট নুরুলাকে দেখেই বলে চলেছে, ওয়েলকাম নুরুলা,হাউ আর ইউ, ম্যাডাম?তারপর ওটা স্তব্ধ হয়ে গেল--স্থবির লোহার মূর্তি বনে গেল।
আশ্চর্য হবার অবসর নেই--সমরের মুখোমুখি এসে দাঁড়ালো নুরুলা,সোজা বলে উঠলো তুমি আমার কথা কিছু ভাবলে না?
--তোমার কথা!এখন আমার কারো কথা ভাবার সময় নেই,যা ভাবার এমেরিকা থেকে এসে ভাবব।
--আমায় তুমি একা রেখে যাবে?
--বললাম তো অন্য কিছু এখন ভাবতে চাই না আমি।
--তা হলে কি আমাদের প্রেম,ভালবাসা--
আমার মিশান শেষ না হলে আমি অন্য কিছু ভাবব না।
--তা হলে এত দিনের মেলামেশা,ভালবাসা এসবের--
--আপাতত কোন মূল্য নেই।হ্যাঁ,এটা শুধু বলতে পারি,কোন দিন যদি বিয়ে করার মন হয় আর সে পর্যন্ত যদি তুমি আনম্যারেড থাকো তবে আমি তোমায় বিয়ে করতে পারি।
নুরুলা এত দুরের কথা ভাবে না,যে মানুষটা নিজে এত সময় ধরে প্রেমের নাটক করে গেছে- তাকে বাহুডোরে বেঁধে শরীরের আস্বাদ গ্রহণ করেছে।আজ তার মুখে এমনি ধরনের কথা!ও কি মানুষ,না হৃদয়হীন--ওই লোহার মূর্তির মতই যন্ত্র বিশেষ?
ইতিমধ্যে সমর নুরুলাকে এসে চুমু খেল।
নুরুলা সরে গেল,না,আর না,এমনি হৃদয়হীন পুরুষের ভালবাসা সে গ্রহণ করতে পারবে না। এক ব্যাবহারিক বস্তুর মত প্রতিদিনের চায়ে চুমুক দেবার মত আত্মতৃপ্তি --অবসর বিনোদন?ও রাগে দুঃখে তাড়াতাড়ি সমরদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিল।
(৩)
ব্যালকনিতেই পায়চারী করছিল নুরুলা।হঠাৎ নজরে পড়ল,কালকের সেই লোকটা,ছাদে পাই চারি করে বেড়াচ্ছে।ওর চেহারার দিকে নজর পড়ল তার,ও চমকে উঠলো,কে?কাকে দেখছে সে?? চালচলন,চেহারা ঠিক যেন সমরের মত!এবার সোজাসুজি চোখ পড়ল ওর দিকে।হ্যাঁ,তাই তো মনে হচ্ছে।আরে লোকটা হাত তুলে—হ্যায়,করল না!হ্যাঁ,সমর ওর দিকেই নিষ্পলক তাকিয়ে আছে।শিষ্টতাকে উল্লঙ্ঘন করে এত রাতে এই দূরত্ব পার করে ও হয়তো কিছু বোলতে পারলো না।
একবার নুরুলার মনে হল কি দরকার আবার সেই এক তরফা ভালোবাসাকে টেনে এনে?ও মাইগ্রেনের ব্যথাটা আবার অনুভব করতে লাগলো।চোখে ঝাপসা দেখতে লাগলো।আর বাইরের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থাকতে পারল না--ভাবল--কাল নিশ্চয় সমর তার খোঁজ নিতে আসবে।
রাত তখন অনেক—হঠাৎ চোখ মেলল নুরুলা,একি!সমর,ধীরে ধীরে ওর বিছানার দিকেই এগিয়ে আসছে না!তাড়াতাড়ি সোয়া ছেড়ে উঠে বসলো নুরুলা।বিস্ময়ের চোখ নিয়ে তাকাল সমরের দিকে!
--নুরুলা!তোমায় দেখেই চিনতে পেরেছি।সকালের আর অপেক্ষা করতে পারলাম না।এস আমার কাছে এস,নুরুলা!
অনেক রাগ ফুঁসলে উঠছিল নুরুলার।ও চুপটি করে নিজের জাগায় বসে থাকলো।
--চলো নুরুলা,আমরা ঘুরে আসি--এ সময় কেউ থাকবে না--শুধু তুমি আর আমি।
--না,না,এ হতে পারে না,নুরুলা আনমনে বলে উঠলো।
সমর ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে—একি,ও নুরুলার হাত টেনে ধরেছে কেন?
--এস নুরুলা--আমরা এই রাতের আকাশে,এই চাঁদ তারার আকাশে ঘুরে আসি।নুরুলাকে সমর কোলে তুলে নিলো--আর ব্যালকনির দরজা খুলে—এ কি,সমর ওকে নিয়ে উড়ে যাচ্ছে আকাশে! সমর দিব্যি স্পাইডার ম্যানের মত ক্রমশঃ আকাশের উঁচুতে উড়ে যাচ্ছে!
এবার নুরুলাকে সমর কোল থেকে নামিয়ে দিল।বলল,ভয় পেও না,আমার শরীর তুমি ছুঁয়ে থাকো,এই বায়ু মণ্ডলে অনায়াস ভর রাখতে পারবে।
--ওই দেখো আকাশের চাঁদ,তারা কত কাছে!
হ্যাঁ,নুরুলা দেখল,নানা আকৃতির তারাগুলি--কোনটা খুব বড়,কোনটা ক্ষুদ্রকায়—কোনটা কাছে,আবার কোনটা অনেক দূরে।এখানে তারাদের নানা রকম রং—লাল,নীল,সবুজ, হলুদ--রামধনুর রং ধরে আছে!তারই মধ্যে প্রকাণ্ড গোলাকার চাঁদ তার সাদা অনুজ্জ্বল আলো নিয়ে ঝুলে আছে পশ্চিম আকাশের ঢালানে!
অনেক দূরে ওরা পলকে ছুটে চলেছে--পুঞ্জ পুঞ্জ নক্ষত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চারি দিকে, নতুন পৃথিবীর দেশ দেশান্তর পেরিয়ে ওরা এগিয়ে চলেছে!
এক জাগায় ওরা এসে দাঁড়ালো। এখানে নুরুলা দাঁড়িয়ে আছে--পড়ে যাচ্ছে না--
সমর বলে উঠলো পৃথিবীর গুরুত্ব আকর্ষণের বাইরে আমরা,তাই নীচে পড়ে যাচ্ছি না।চলো আমরা এখানে খেলে বাড়ায়,এই ঘন সাদাকালো মেঘের আড়ালে ছোঁয়া ছুঁই খেলি এসো!
নুরুলা নীচে,অনেক নীচে দেখল,সূর্যের রকম ফের আলোর প্রকাশে,বাধা নির্বাধ আলোক প্রকাশে মেঘেদের ফাঁকে ফাঁকে সাত রং যেন ঠিকরে পড়ছিল।প্রকৃতির রং খেলা চলছিল সেখানে--আর প্রেমিক প্রেমিকা তাদের ভাব বিনিময়ে ছিল ব্যস্ত।সমর তাকিয়ে ছিল নুরুলার দিকে,নুরুলা সমরের দিকে।
এক সময় হঠাৎ নুরুলার পায়ের তলা আলগা হয়ে গেল-- ও দেখল ও নীচে পড়ে যাচ্ছে-- প্রচণ্ড বেগে ও নীচের দিকে ছুটে চলেছে--এবার ওর মৃত্যু অবধারিত।চারিদিকের আলোর ঢেউগুলি ঠিকরে এসে ওর গায়ে লাগছিলো। মাটিতে পতনের মুহূর্ত সময় আগেই সমর তাকে ধরে নিলো।আর ব্যালকনির দরজা ধরেই ওরা আবার প্রবেশ করল নুরুলার হোটেলের ঘরে!
সকালে ধড়ফড় করে বিছানা ছেড়ে উঠলো নুরুলা।অনেক বেলা হয়ে গেছে। আজই বিকেলে ওর ফ্লাইট।নিজের দেশে ফিরতে হবে।কিন্তু তার আগে সমরের সঙ্গে ওকে দেখা করতে হবে।কাল রাতের অলৌকিক ঘটনার কথা মনে পড়ল। সমরের স্বভাব,মনের পরিবর্তন লক্ষ্য করেছে ও।রাতের আকাশচারী হয়ে মনে হয়েছে ও অনেক বদলে গেছে--এখন হয়তো সত্যি সে তাকে ভালোবাসবে।আর চমত্কার?তাও হয়তো কোন বিজ্ঞানের চমৎকারই হবে!
বন্ধ ঘরের কলিং বেল বাজাল নুরুলা।এই ঘরের ব্যালকনিতেই কাল রাতে সমরকে দেখেছে।
দরজা খুলে গেল,কাকে চাই?
এ কি!এই তো সমর,ও কি চিনতে পারছে না নুরুলাকে?
এবার লোকটা বলে উঠলো,ও আপনি--নুরুলা?এ কেমন ব্যবহার সমরের!
--কেন না চেনার ভান করছ,সমর?কুণ্ঠিত হয়ে ও বলে উঠলো।ঠিক এমনি সময় ঘরের ভিতর থেকে আর এক সমর বেরিয়ে এলো।বলল,ভেতরে এস,নুরুলা!
নুরুলা হতবাক হয়ে গেল।দরজা খুলে দিল যে লোকটা সে যে সমরের মতই দেখতে!ও বড় দ্বিধা নিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকল।
সমর বলল,আমি সমর,ও আমার সার্ভেন্ট, রোবট।আমারই ডুপ্লিকেট বানাবার চেষ্টা করেছি।রাতে তো ওকেই আমার চমত্কার দেখাতে পাঠিয়ে ছিলাম।ও নিশ্চয় তোমাকে আকাশ ঘুরিয়ে দেখিয়েছে?
কোন ইন্দ্রজালে আবদ্ধ হয়েছে নুরুলা।কে তাকে এমনি সম্মোহিত করেছে? রোবটের বলাৎকার, তাকে আকাশে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া--সত্যি কি ও জাপানে এসেছে?নাকি সবটাই তার রাতের স্বপ্ন?
--সমর বলে চলেছিল,ওর মুভমেন্ট মানুষের মত,ওর শারীরিক গঠন অনেকটা মানুষ যেমন।ও তোমায় চেনে,রাতে তোমায় উড়িয়ে নিয়ে নিশ্চয় আমার মতই প্রেমিক হয়ে তোমার সামনে এসেছিল?এবার হঠাৎ সমরের কিছু মনে পড়ে গেলো,সিরিয়াস হয়ে গেলো ও, বলল, প্লিজ,নুরুলা,হাতে আমার একটুও সময় নেই,এখনি আমায় কোম্পানির অফিসে যেতে হবে।গবেষণার অনেক কাজ পেন্ডিং আছে।তুমি বসো,আমার ডুপ্লিকেটের সঙ্গে গল্প করে যাও। আর একটা কথাও বলল না সমর,হাতে অফিসের এটাচি নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
এক কাপ চা নিয়ে হাজির হল রোবট,সমর।মুখে ওর মিষ্টি হাসি--গত কাল রাতের মত মৃদুমন্দ হাসছিল।
নুরুলার ভীষণ রাগ হচ্ছিল।এক তিল বদলায় নি সমর।এমনি মানুষ কখনো কাউকে ভালোবাসতে পারে না--কখনো না!বুকের মধ্যে কোথাও যেন একটা ব্যথা অনুভব করছিল--বড় গভীর থেকে কুণ্ডলী পাকিয়ে সে ব্যথা ধীরে ধীরে তার সমস্ত মন ও শরীরকে গ্রাস করে নিচ্ছিল।
সমাপ্ত
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ম্যারিনা নাসরিন সীমা সাবলীল ভাষায় লেখা চমৎকার একটা গল্প ! খুব ভাল লাগলো ।
শাহ আকরাম রিয়াদ গল্পটি পড়ে ভাল লাগল... শুভকামনা রইল তাপস দা।
ভাবনা পাকা লেখনি ! দক্ষ হাত । শুভেচ্ছা ।
সালেক শিবলু ভালো লাগলো ধন্যবাদ.
সূর্য ২ অনুচ্ছেদে ফ্লাশব্যাকটা যেন হঠাৎকরেই মূল গল্প হয়ে গেল। আর ম্যাকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার রোবটকে মধ্যাকর্ষ, অভিকর্ষ বলের বাধা ডিঙ্গাতে সক্ষম হয়েছে বুঝে নিলাম। অত উচুতে নুরুলা বেঁচে থাকলো কিভাবে? কাজের প্রতি নিষ্ঠাবান একজন পুরুষের প্রতি নুরুলার এক তরফা ভালবাসাটাই এখানে প্রধান হয়ে উঠেছে। বাকি সব এসেছে অনুসঙ্গ হয়ে। এই ভালবাসার গল্পটা ভাল লেগেছে আর বাক্য গঠনেও (উদার উদাসী, ঈষৎ ভাবনার উৎফুল্লতায় রাঙা সে চোখ যেন সমর প্রথমবার দেখল!) পরিমিতি বোধের ছাপ পাওয়া যায়। অনেক শুভেচ্ছা।
বুঝে নিতে হবে এটা কল্প কাহিনী--বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা না চাইলেই যেন ভালো হয়.
আহমেদ সাবের রোবট বিজ্ঞানী সমরের সাথে নুরুলার একতরফা প্রেমের কাহিনী। রোবটের পদচারনা আছে। সমরের ডুপ্লিকেট প্রেমিক হয়ে নুরুলাকে রাতে আকাশ ভ্রমনে নিয়ে যায়। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর চেয়ে নুরুলার প্রেমই জীবন্ত হয়ে উঠেছে গল্পে। সাবলীল লেখা। অচেনা পটভূমিকায় লেখা বলে কিছু তথ্যগত ভুল রয়ে গেছে। যেমন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিঙের বলে কোন বিভাগ নেই। অবশ্য এটা যেহেতু ভবিষ্যতের গল্পে, ততদিনে থাকতেও পারে। "নিগ্রো " শব্দটা ব্যাবহার না করাই ভাল। কবিতার মত গল্পতেও আপনার হাত চমৎকার। বেশ ভাল লাগল গল্পটা।
ঐশী আপনার গল্প পড়লাম ; ভাল লাগলো ।
Dr. Zayed Bin Zakir (Shawon) কল্পবিজ্ঞানের চাইতে প্রেম ভালবাসা বেশি এসে গেছে. আমি খুব একটা যে আনন্দ পেয়েছি সেটা বলতে পারছি না. তবে আপনার জন্য শুভো কামনা রইলো
প্রদ্যোত বাস্তব ও কল্পনার এক অপূর্ব সংমিশ্রন ... ভালোলাগলো ... শুভকামনা রইলো

৩০ সেপ্টেম্বর - ২০১২ গল্প/কবিতা: ২৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪